ইলিয়াস কাঞ্চন যতোটা না অভিনেতা, তারও বেশি নেতা। অভিনয়ের নায়ককাল পার করে তিনি মূলত রাজপথে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের দাবিতে। যার জন্য তাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। যুদ্ধ করতে হয়েছে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে। এখনও যা চলমান রয়েছে বলে মনে করেন অভিনেতা।
সড়কের বিভিন্ন সমস্যা ও পরিবহন মালিকদের অরাজকতা নিয়েও বরাবর কথা বলেছেন কাঞ্চন। যে কারণে বিগত সরকারের ১৫ বছরে প্রচুর ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সঙ্গে একাধিকবার বিবাদে জড়িয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় কথা বলেছেন এই নায়ক। যেখানে কাঞ্চন সরাসরি দাবি করেছেন, তিনি কখনোই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে ইদানিংকালে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ইলিয়াস কাঞ্চনের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে নেওয়া তার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এখন সরকারিভাবে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ পালিত হচ্ছে। কিন্তু একটি মহল বিষয়টি অস্বীকার করছে।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে আন্দোলন, তারও আগে থেকে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, তাদের দাবির ভিত্তিতেই নাকি জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এর আগে নাকি নিরাপদ সড়কের জন্য মানুষের কোনও আকাঙ্ক্ষা ছিল না।’
অভিনেতা আরও বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাকে শাজাহান খান গংদের মতো মাফিয়াচক্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার ছবি টাঙিয়ে তারা জুতা নিক্ষেপ করেছে। আমার ছবি ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছে।’
এদিকে সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে বর্তমান সরকার নিয়েও সমালোচনা করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘সরকারকে নিয়ে যেসব কথাবার্তা শুরু হয়েছে, সেটা ভয়াবহ। আমরা যারা অনেক রিস্ক নিয়ে, অনেক ত্যাগ করে এই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলাম, এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, এই আন্দোলন যদি ব্যর্থ হয়, তারা যদি আবার ফেরত আসে, তাহলে আমাদের অবস্থা কী হবে? আমাদের কী পরিণতি হবে, এটা কিন্তু আমরা কেউ ভেবে দেখছি না।’
আরও বলেন, ‘একদল মানুষ বলছে আমি নাকি আওয়ামী লীগের লোক। এটা সমন্বয়কদের কাছে তারা বলেছে। এমনটাও বলেছে, আমি নাকি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। তারা বলে- আমি আওয়ামী লীগের লোক, এই দলের লোক, ওমুক পার্টির লোক... দেশবাসী জানে আমি কোনোদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হইনি। কিন্তু এবার যেভাবে তারা আমাকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই আমি আওয়ামী লীগের কেউ হয়ে থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন। আপনাদের ক্ষমতা দেখান। তবুও অপপ্রচার চালাবেন না। আমি দেশবাসীর কাছে এই অপপ্রচারের বিচার চাই।’