০৬ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১০:৩৩:২২ পূর্বাহ্ন


নায়িকা নাবিলার উপস্থাপনায় ফেরা
আগন্তুক আলেয়া
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৪-১০-৩১ ১৮:৩৪:৫৩
নায়িকা নাবিলার উপস্থাপনায় ফেরা


না। সিনেমার নাম ‘ইউটার্ন’ নয়। এটা নাবিলার ক্যারিয়ার সড়কের ইউটার্ন। যেখান থেকে শুরু করেছিলেন, সেখানেই যেন আবার ফিরে এলেন মুগ্ধতা নিয়ে। অনেকটা নিজেকে নতুন অবয়বে পুরনো আসনে ফিরে দেখার মতোই। অনুমান ঠিক, সফল নায়িকা জীবন পেরিয়ে নাবিলা আবারও ফিরছেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায়। ‘তুফান’ নায়িকার এই ফেরাটা মোটেও সাদামাটা হচ্ছে না। বরং ‘আয়নাবাজি’র ঝলক থাকছে এই অধ্যায়ে।

মূল খবর, ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে মাসুমা রহমান নাবিলার সঞ্চালনায় ৫০ পর্বের বিশেষ শো ‘রাঁধুনী-র রান্নাঘর: বাংলার সেরা ১০০ রেসিপি’। নাম শুনে অনুমান করা ঠিক হবে না, এটি আট দশটি রান্নার অনুষ্ঠানের মতো কিছু। একদমই তা নয়। বরং নাবিলা মনে করেন, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রান্নাবিষয় ভাবনায় অনেক পরিবর্তন আসবে জনমনে। যা অনুমান করা যাবে প্রতি শুক্রবার রাত ৯টা বাজে, মাছরাঙার পর্দায় চোখ রাখলে।  

তবে অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ঢোকার আগেই নাবিলার প্রতি প্রশ্ন ছিলো, তার এই ইউটার্ন ‘চমকদার’ হবে তো? কারণ এ বছরই ‘আয়নাবাজি’র ৮ বছর পর চলচ্চিত্রে কামব্যাক করলেন ব্লকবাস্টার ‘তুফান’ দিয়ে। নাবিলা বলেন, ‘হ্যাঁ, মাঝে ব্যক্তিগত ব্যস্ততা, চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের ব্যস্ততা মিলিয়ে উপস্থাপনাটা করা হচ্ছিলো না। তবে এবার উপস্থাপনায় ফিরতে পেরে খুব খুশি। জানেনই তো, এই কাজটা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। কিন্তু ফিরলেই তো হবে না। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম, ফিরলে সেভাবেই ফিরতে হবে। যাতে দর্শকরা চমকিত হয়। উপস্থাপনায় ফেরাটাকে রিমার্কেবল করতে চেয়েছিলাম। তাই একটু অন্যরকমভাবেই ফিরলাম। এই নাবিলা কিন্তু আগের নাবিলা না, পুরোই ডিফারেন্ট!’

অন্য অনুষ্ঠানের চেয়ে এটি কেন আলাদা হবে? কি থাকছে এতে? জবাবে নাবিলা জানান, ‘‘কয়েকবছর আগে বাংলাদেশের নানা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রান্না নিয়ে ‘সেরা রাঁধুনী’ প্রতিযোগীদের দেয়া ১০০ রেসিপিতে একটি বই সাজানো হয়। সেই বইয়ের রেসিপিগুলোরই বলা যায় ডিজিটাল ভার্সন এই কুকিং শো। বইয়ের আমেজ আলাদা, তবে যুগের চাহিদার সাথে মিলিয়ে ডিজিটাল ফরম্যাটেও রেসিপিগুলো রাখা জরুরি। যারা বইটিতে রেসিপি দিয়েছিলেন, মোটামুটিভাবে তারাই এই রেসিপিগুলো রান্না করে দেখাবেন এবার। আমাদের এখানে কিন্তু রেসিপি বুক-ভিত্তিক কুকিং শো তেমন একটা দেখা যায় না, বাইরের দেশে অহরহ হয়। সে হিসেবে এটি আমাদের জন্য একেবারেই ইউনিক শো।’’

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতে গিয়ে বাংলার খাবার নিয়ে নাবিলার অভিজ্ঞতা কেমন? সে প্রসঙ্গেও বললেন অকপট। বললেন, ‘‘পুরো বিষয়টি বেশ ইন্টারেস্টিং। কোভিডের সময় সবাই যখন ঘরে বন্দি, তখন ‘রাঁধুনী’-র পক্ষ থেকে ‘সেরা রাঁধুনী’র ১৭ জন প্রতিযোগীর কাছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কিছু রেসিপি চাওয়া হয়। সম্প্রতি ওনাদের সাথে গল্পচ্ছলে শুনেছি, সেই হতাশার সময়ে এই কাজটা তাদেরকে আলাদা একটা মোটিভেশন দিয়েছে। আমি না তাদের কাজের মধ্যে, রেসিপিগুলোর মধ্যে সেই উদ্যমটা দেখেছি। বাংলাদেশের রান্না, বাংলার স্বাদ নিয়ে কাজ করতে তাদের এই স্পৃহা, তাদের সদিচ্ছা, ডেডিকেশন, যেটাই বলি... এগুলো আমাকে আমাদের রান্নার প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলেছে। বাংলাদেশি খাবারের যে এতো বৈচিত্র্য রয়েছে তাও নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম।’’

নাবিলা নিজের ফিটনেস ধরে রেখেছেন বটে, তবে তিনি কিন্তু খুবই খাবারপ্রেমী। কিন্তু এই ১০০ রেসিপি’র শো করতে গিয়ে তার কাছে কোন রেসিপিটি বেশি পছন্দ হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে নাবিলা বলেন, ‘আমি খুব ফুডি। তাই এই অনুষ্ঠানে আমার সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত ছিলো খাবারের স্বাদ নেয়ার সেগমেন্টটা। আরেকটা সিক্রেট শেয়ার করি... আমার কিন্তু শুটিংয়ের খাবার বলতে গেলে খাওয়াই হতো না। সবসময় সেটে রাঁধুনীরা যা রান্না করতেন সেই ডিশগুলোই মজা করে খেতাম। আবার অনেক সময় বাসায় হাজবেন্ডের জন্যেও জোর করে খাবার প্যাক করে নিতাম!’

সঙ্গে নাবিলা জানান ব্যক্তিজীবনে নিজের তৈরি পছন্দের রেসিপিটাও। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে আসা গেস্টদের জন্য প্রথম বানিয়েছিলাম শাহি টুকরা। ইফতার আইটেম ছিলো সেটি। সবাই এতো প্রশংসা করেছিলো যে কী বলবো। আর আমার মেয়ে আমার বানানো পাস্তার বিশাল ভক্ত। আমি একটা ব্রেড পিজা করি, সেটাও পছন্দ করে খায়।’

শেষে নাবিলার আহ্বান দর্শকদের প্রতি, ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্নাগুলোকে নতুনভাবে চিনতে, জানতে ও শিখতে আমাদের অনুষ্ঠানটি দেখুন। টেলিভিশনের পাশাপাশি মাছরাঙা টেলিভিশন ও রাঁধুনী’র ইউটিউব চ্যানেলেও দেখা যাবে অনুষ্ঠানটি।’