০৬ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৭:৩৫:০৪ পূর্বাহ্ন


‘মনে হচ্ছে নিজের মা আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে’
ট্রেন্ড ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১২-১১ ০১:১৩:০৪
‘মনে হচ্ছে নিজের মা আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে’ ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন


‘সারাটা বছর আমরা অপেক্ষা করি কবে আসবে মা দুর্গা। জীবনের এই ব্যস্ত সময়ে একরাশ আনন্দ নিয়ে আসেন মা দুর্গা। আমাদের সুখ দুঃখের সামিল হন । তবে বিসর্জন মানে অনেক কষ্ট। বিসর্জনের সময় মায়ের বিদায় বেলা মনে হয় আপন মা আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিসর্জনের সময় দুর্গা মায়ের জন্য মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেছে’—বলছিলেন বিসর্জন দিতে আসা বন্যা রায়।

আজ মহা দশমীর মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিতে গিয়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন হাজারও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আবার কেউবা দুর্গা মাকে বিসর্জন দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে গিয়েছেন। পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সমবেত হন।

এদিন সকাল থেকেই থেকে ঢাকের বাদ্য, ঘণ্টার শব্দ এবং উলুধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছিল পুরান ঢাকার অলিগলি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস দেবী দুর্গা তার সন্তান-সন্ততি নিয়ে স্বর্গ থেকে বাবার বাড়িতে নেমে আসেন, পাঁচ দিন পূজিত হয়ে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি পুনরায় কৈলাসে (স্বর্গে) ফিরে যান।

দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়ার পূর্বে পুরান ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে খামারবাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদের গাড়ির সামনে গানের তালে নাচছিলেন একদল যুবক যুবতী। তাদের মধ্যে একজন সোমা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, দেবী মাকে আজ নদীতে বিসর্জন দেবো। বছর ঘুরে তিনি আমাদের মাঝে আশীর্বাদ হয়ে এসেছেন। এখন চলে যাচ্ছেন। আগামী বছর আবার আসবেন। এই পূজায় সবার সুখ সমৃদ্ধি কামনা করছি।

দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিয়ে আসার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিপ্তী বলেন, দিদাকে নিয়ে বিসর্জন ঘাটে এসেছি। দিদা প্রতি বছরই মাকে বিদায় জানাতে এই ঘাটে আসেন। আমি এবার প্রথম নিজ হাতে দুর্গা মাকে বিসর্জন দিতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, গতবারের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এবার পূজা উদযাপনে আমরা শঙ্কায় ছিলাম। তবে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পেরেছি। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এদিকে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। তাদের মধ্যে একজন শাহাদাত হোসেন। তিনি এসেছেন তার দুই ছেলেকে নিয়ে। শাহাদাত বলেন, ছেলেরা টিভিতে দুর্গাপূজার দৃশ্য দেখে এখানে আসতে চায়। তাই নিয়ে এসেছি। আমাদের সকলের উচিত অন্য ধর্মের প্রতি ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সদয় হওয়া এবং তাদের উৎসবকে প্রাণবন্ত করার জন্য উৎসাহ দেওয়া। কারণ ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন