কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত দর্শক তিনি। অনেকের মতে এবারের আসরে সবচেয়ে ‘আবেদনময়ী’ সমর্থক। তিনি ইভানা নল; সাবেক মিস ক্রোয়েশিয়া। নিজ দেশের সমর্থনে তিনি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই কাতারে অবস্থান করছেন এবং স্টেডিয়ামে গিয়ে ছড়াচ্ছেন উত্তাপ।
ইভানা নলের আলোচনায় আসার মূল কারণ, তিনি খোলামেলা পোশাকে মাঠে উপস্থিত হন। অথচ বিশ্বকাপ শুরুর আগেই কাতার কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলো, খোলামেলা পোশাক পরা যাবে না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে তুড়ি মেরে নিজের স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে নিয়েছেন মিস ক্রোয়েশিয়া।
ক্রোয়েশিয়ার প্রতিটি ম্যাচেই তিনি স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন। প্রতিবারই তার পরনে থাকে স্বল্প বসনা। এমন রূপে তাকে দেখে অবাক হন কেউ, কারও মনে জাগে উচ্ছ্বাস। তাই সুন্দরী মডেলের সঙ্গে ছবি তুলতে এগিয়ে আসেন অনেকে।
এবার এই কাজটি করতে গিয়েই বিপাকে পড়তে হয়েছে ইভানা নলকে। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে তিনি বরাবরের মতো খোলামেলা রূপে স্টেডিয়ামে হাজির হন। এ সময় তার পরনে ছিলো লাল রঙের অন্তর্বাস ও একটি লেগিংস।
খেলা শুরুর আগ মুহূর্তে ইভানা যখন এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে প্রবেশ করেন, তখন উচ্ছ্বসিত দর্শক তার সঙ্গে ছবি তোলার আগ্রহ প্রকাশ করে। তিনিও সেলফিতে পোজ দেওয়া শুরু করেন। এই মুহূর্তেই বাগড়া দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা। ইভানাকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটতে নিষেধ করা হয় এবং তার আসনে বসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি কারও সঙ্গে ছবি তুলতেও নিষেধ করা হয় তাকে।
বিষয়টি নিয়ে ইভানা নল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা আমাকে ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলার অনুমতি দেয়নি। এছাড়া রেলিংয়ের কাছে গিয়ে আমাকেও ছবি তুলতে দেয়নি। আমি তখন তাদের জিজ্ঞেস করেছি, কেন এত বাজে ব্যবহার করছে আমার সঙ্গে! কিন্তু উত্তর পাইনি।’
এর আগে কাতারের এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ইভানা নল। বলেছিলেন, ‘আমি খুব রাগান্বিত যে, আমি তো মুসলমান নই। ইউরোপে আমরা যদি হিজাব-নিকাবকে সম্মান দিতে পারি, তাহলে আমাদের জীবনধারাকেও তাদের সম্মান জানানো উচিত। আমাদের ধর্ম, পোশাক এসবকে সম্মান দেওয়া উচিত, কারণ আমি ক্রোয়েশিয়ার একজন ক্যাথলিক, এখানে এসেছি শুধুমাত্র বিশ্বকাপের জন্য, নিজের দেশকে সাপোর্ট করার জন্য।’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিল। এর মাধ্যমে সেমিফাইনালে উঠেছে ইউরোপিয়ান দলটি, অন্যদিকে বিশ্বকাপ আসর থেকে বিদায় নিতে হয়েছে নেইমারদের।
সূত্র: ডেইলি মেইল