০৬ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৭:৫৪:৩১ পূর্বাহ্ন


সংখ্যা ও রেকর্ডে ম্যাজিক মেসির বিশ্বকাপ
ট্রেন্ড ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১২-১৯ ২০:৫১:৪৩
সংখ্যা ও রেকর্ডে ম্যাজিক মেসির বিশ্বকাপ


শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে টাইব্রেকারে জয় পেলো আর্জেন্টিনা। যদিও ৬ গোলের বন্যা ছিল ম্যাচে। ৫৬ বছরের রেকর্ডও ভাঙলেন এমবাপ্পে। একাই করলেন হ্যাটট্রিক। মেসিও বিশ্বকাপে ৭ গোল দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নিলেন গোল্ডেন বল। এমবাপ্পে পেলেন গোল্ডেন বুট।  

বিশ্বকাপের ইতিহাসে গতকাল সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়লেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপে তার ২৬তম। এর মধ্য দিয়ে জার্মানির লোথার ম্যাথাউসকে টপকে তিনি ১ নম্বরে উঠে গেলেন। রেকর্ড গড়া ম্যাচে ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। পরে আরো এক গোল করে আর্জেন্টিনার জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ৩৫ বছর বয়সী মহাতারকা।

১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে পরাজিত লোথার ম্যাথাউস ১৯৯০ সালে জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন। এরপর জার্মানির হয়ে ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও খেলেছেন। পাঁচ বিশ্বকাপে ম্যাথাউস ২৫টি ম্যাচ খেলে এতদিন বিশ্বকাপে ১ নম্বরে ছিলেন। উল্লেখ্য, জার্মানির জার্সিতে সর্বোচ্চ ১৫০ ম্যাচ খেলেছেন ম্যাথাউস, যার মধ্যে ৮৩টি ম্যাচ খেলেছেন পশ্চিম জার্মানির হয়ে।

কাতার বিশ্বকাপে গতকাল সপ্তম ম্যাচে মাঠে নেমে ম্যাথাউসকে টপকে যান মেসি। কাতারে গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ খেলার পর শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেললেন এলএম ১০। গত বিশ্বকাপে মেসিদের বিদায় হয় শেষ ষোলো থেকে। এবার শিরোপা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন তারা।

কাল দুই গোল করায় আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে মোট ২১টি গোলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেন মেসি। গোল করেছেন ১৩টি, আর অ্যাসিস্ট ৮টি। বিশ্বকাপে ২১টি গোলের সঙ্গে জড়িত থাকার নজির নেই বিশ্বের আর কোনো খেলোয়াড়ের। আবার গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল ও ফাইনালে গোল করা একমাত্র ফুটবলার মেসি।

এটা ছিল মেসির পঞ্চম বিশ্বকাপ। ২০০৬ সালে জার্মানিতে খেলেন প্রথম বিশ্বকাপ। এরপর ২০১০, ২০১৪, ২০১৮ বিশ্বকাপ খেলার পর আলো ছড়ালেন কাতার বিশ্বকাপে। সে সঙ্গে গড়লেন ম্যাচ ও গোলের অসংখ্য রেকর্ড।

বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে নেমেই রেকর্ডে নাম লেখান মেসি। মেক্সিকোর আন্তনিও কারবাহাল ও রাফায়েল মার্কেজ, জার্মানির লোথার ম্যাথিউজ এবং ইতালির জিয়ানলুইজি বুফনের রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলার রেকর্ড গড়েন। তবে কাতারে এই তালিকায় আছেন আরও তিনজন। এবার মেক্সিকোর আন্দ্রেয়াস গার্দাদো ও গিলার্মো ওচোয়া এবং পর্তুগালের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোও ৫টি বিশ্বকাপ খেলেছেন।

আটজন পাঁচটি বিশ্বকাপ খেললেও সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপ খেলেছেন মেসি। এতদিন সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপ খেলার তালিকায় ছিলেন বুফন (৩৬ বছর)। কিন্তু এই রেকর্ডের মালিক এখন লিওনেল মেসি।

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি দুই হাজার ৩১৪ মিনিট মাঠে থেকেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। আর ইতালিয়ান কিংবদন্তি পাওলো মালদিনি খেলেছেন দুই হাজার ২১৭ মিনিট।

অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ১৯টি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেসি। আর মেক্সিকোকে ১৭টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রাফা মার্কেজ।

আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৩টি গোল করেছেন মেসি। আর গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা করেছেন ১০টি গোল।

বিশ্বমঞ্চে সবচেয়ে বেশি গোলে সরাসরি অবদান মেসির। মোট ২১টি গোলে অবদান রয়েছে তার। এর মধ্যে ১৩টি গোল ও ৮টি অ্যাসিস্ট। মেসির পরেই আছেন জার্মানির মিরাস্লাভ ক্লোসা ও ব্রাজিলের রোনালদো। তাদের অবদান মোট ১৯ গোলে।

একমাত্র মেসিরই পাঁচটি ভিন্ন আসরে অ্যাসিস্ট করেছেন। মেসির পরে বাকি সবাই তিনটি ভিন্ন আসরে অ্যাসিস্ট করেছেন। এই তালিকায় আছেন দিয়াগো ম্যারাডোনা, পেলে, জেগোস লাতো ও ডেভিড বেকহ্যাম।

বিশ্বকাপে অ্যাসিস্টে দিয়াগো ম্যারাডোনার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন মেসি। দুইজনেরই অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৮টি।

বিশ্বকাপের নকআউটে কিংবদন্তি পেলের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন মেসি। নকআউট পর্বে দুইজনেরই অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৬টি।

বিশ্বকাপে মেসির প্রথম ও সবশেষ গোলের ব্যবধান ১৬ বছর ১৮৪ দিন। মেসির পরেই আছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। তার প্রথম ও সবশেষ গোলের ব্যবধান ১৬ বছর ১৬০ দিন।

বিশ্বকাপে মেসি সবচেয়ে বেশি ১১ বার ম্যাচসেরা হয়েছেন। এর মধ্যে কাতারেই পাঁচবার, যেটি এক আসরেও সর্বোচ্চ।

বিশ্বমঞ্চে মেসিই একমাত্র ফুটবলার যিনি এক আসরে গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করেছেন।

একমাত্র মেসিই এক আসরে তিনটি ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন।

ফুটবল ইতিহাসে মেসিই প্রথম ফুটবলার যিনি দুটি গোল্ডেন বল জিতেছেন। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপেও গোল্ডেন বল পেয়েছিলেন এই ক্ষুদ্রে জাদুকর।