চোখের জল যে বাধা মানবে না, তা জানতেন। ১৮ বছর ধরে নিজেকে নিংড়ে দেওয়ার পর পেশাদারি টেনিস থেকে বিদায় নেওয়ার মুহূর্তটা যে কঠিন হতে চলেছে, তার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন সানিয়া মির্জা। আর শেষটা যখন সত্যিই চলে এলো, তখন চোখের জল আটকাতে পারলেন না ভারতের টেনিসের ‘কুইন’। বিদায়বেলায় ভেঙে পড়লেন কান্নায়।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মিক্সড ডাবলস ফাইনালে হেরে যান সানিয়া। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আবেগে ভেসে যান। শুরুটা হাসি দিয়ে করলেও ভেতরটায় যে আবেগ দলা পাকিয়ে আসছিল, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। তারইমধ্যে সানিয়া বলেন, ‘আমি যদি কাঁদি, তাহলে সেটা কষ্টের কান্না হবে না। সেটা আনন্দাশ্রু হবে। আগে থেকেই সতর্কীকরণ দিয়ে রাখছি। তবে এই মুহূর্তটা আমি ব্রাজিলের জুটির থেকে কাড়তে চাই না। তোমরা দারুণ খেলেছ।’
সানিয়া আরও বলেন, ‘আমি আরও কয়েকটি টুর্নামেন্ট খেলতে চাইছিলাম। কিন্তু আমার পেশাদার টেনিস কেরিয়ার যেখানে শুরু করেছিলাম.... (কথা শেষ করার আগেই কেঁদে ফেলেন সানিয়া)। আমার (পেশাদার কেরিয়ারের যাত্রাটা) শুরু হয়েছিল মেলবোর্নে, যখন ২০০৫ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে তৃতীয় রাউন্ডে খেলেছিলাম। সেইসময় আমার বয়স ১৮ ছিল।’
ভারতের ‘টেনিস কুইন’ বলেন, ‘ওটা ১৮ বছর আগে হয়েছিল। সেই মেলবোর্নে বারবার ফিরে আসা, কয়েকটি ট্রফি জেতা, আপনাদের সামনে দুর্দান্ত ফাইনাল ম্যাচে খেলা (অসাধারণ অনুভূতি)। আমার জীবনে রড লেভার এরিনা অত্যন্ত বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। আমার কেরিয়ার শেষ করার জন্য এর থেকে ভালো জায়গা হতো না। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।’
‘ভেরি ভেরি স্পেশাল’ সানিয়া মির্জা
১) পেশাদারি কেরিয়ারে ৪৪ টি খেতাব জিতেছেন।
২) ছ'টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতেছেন (তিনটি ডাবলস এবং তিনটি মিক্সড ডাবলস)। ২০০৯ সালে মহেশ ভূপতির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মিক্সড ডাবলস, ২০১২ সালে মহেশ ভূপতির সঙ্গে ফরাসি ওপেনের মিক্সড ডাবলস খেতাব, ২০১৪ সালে ব্রুনো সর্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের মিক্সড ডাবলস খেতাব, ২০১৫ সালের উইলম্বডন ডাবলস খেতাব, ২০১৫ সালের ইউএস ওপেন ডাবলস খেতাব এবং ২০১৬ সালে মার্টিনা হিঙ্গিসের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ডাবলস খেতাব জেতেন সানিয়া।
৩) ভারতের একমাত্র মহিলা সিঙ্গলস খেলোয়াড়, যিনি ক্রমতালিকায় ৩০ নম্বরে ছিল।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস