১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন


আজ ১৭ই মার্চ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন
সোহেল জুলফিকার
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৩-০৩-১৭ ০৬:১১:১৭
আজ ১৭ই মার্চ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান



১৯২০ সালের ১৭ মার্চ রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের বাইগার নদীর তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন, যেটি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিনি শেখ বংশের একজন গোড়াপত্তনকারী, শেখ বোরহানউদ্দিনের বংশধর। মা শেখ সায়েরা খাতুন এবং পিতা শেখ লুৎফুর রহমানের ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটি বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্ষিকীগুলির মধ্যে একটি এবং এটি প্রতি বছর ১৭ই মার্চ পালিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করে সাধারণত "বঙ্গবন্ধু" বলেই সবাই তাকে শ্রদ্ধার সাথে সমাদর করে থাকেন। যিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা (বাংলার বন্ধু) হিসাবে স্বীকৃত।


বিবিসি দ্বারা প্রকাশিত ২০০৪ সালের বাংলা পোলে তিনি "সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি" খেতাব পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান তার নামের সাথে মিলিয়ে নামকরণ করা হয়েছে, যার ছবি প্রতিটি টাকায় রয়েছে।


শেখ মুজিব শুধু একটি নাম নয়, এ নামের সাথে জড়িয়ে আছে একটি ইতিহাস, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী চেতনা। ভৌগলিক সীমারেখায় একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা এবং সেই সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনীতি সবই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।


 কৈশোরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার নিজের নেতৃত্বের ঝলক দেখেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সাহসী যুবক যিনি নির্ভীক কণ্ঠে তৎকালীন খ্যাতিমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে গোপালগঞ্জে তার গ্রামের স্কুলের দাবি তুলে ধরেছিলেন।


তরুণ শেখ মুজিব স্কুলে পড়ার সময় একটি ঘটনায় প্রতিবাদী ভূমিকা নেওয়ার জন্য ১৮ বছর বয়সে গ্রেপ্তার হন। সে সময় তাকে সপ্তাহখানেক কারাগারে থাকতে হয়। এটি তাঁর জীবনের প্রথমবারের মতো কারাবরণ ছিলো। এরপর বাঙালি জাতির অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য বারবার কারাবরণ করেন এই মহান নেতা।


পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর, শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শাসকশ্রেণীর নিপীড়নমূলক অনুশীলন, শোষণ এবং অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে সংগ্রাম করে গেছেন।


১৯৪৭-এ দেশবিভাগ ও স্বাধীনতা আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে ২১-দফা, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিণত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পাতায় বঙ্গবন্ধুর নাম অবিস্মরণীয়ভাবে খোদাই করা আছে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসর্কোর্স ময়দানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’


বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির মধ্যে অটুট বন্ধনের কোন পরিসমাপ্তি নেই। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু দুটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের নাম। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বসভায় বাঙালি জাতির সগর্ব উপস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয় বঙ্গবন্ধুকে।


আজ তার জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করছি, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।