১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন


বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
সোহেল জুলফিকার
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৩-০৮-১৫ ০০:৩১:২৬
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি


শেখ মুজিবুর রহমান, যাকে বাংলাদেশে "জাতির জনক" বলা হয়, রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং নেতৃত্বে ভরা একটি অসাধারণ জীবন ছিল। এখানে তার জীবনের ইতিহাসের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল:


- জন্ম: ১৭ মার্চ, ১৯২০, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ জেলার, ব্রিটিশ ভারতে (বর্তমানে বাংলাদেশে)।

- প্রারম্ভিক সক্রিয়তা: ছোটবেলা থেকেই মুজিব রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি আকৃষ্ট হন। স্কুল-কলেজের সময় তিনি ছাত্র ও যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন।

- আওয়ামী লীগ গঠন: ১৯৪০-এর দশকের গোড়ার দিকে, তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ১৯৪৯ সালে, তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে, পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) একটি প্রধান রাজনৈতিক দল।

- ভাষা আন্দোলন: ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে বাংলা ভাষাকে পূর্ব-পাকিস্তানের সরকারী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান।

- চ্যাম্পিয়ন স্বায়ত্তশাসন: পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে তিনি পাকিস্তানি ফেডারেশনের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে একজন শক্তিশালী কণ্ঠ হয়ে ওঠেন।

- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা: ১৯৬৮ সালে, তাকে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত হয়। এই বিচার পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক প্রতিবাদের জন্ম দেয়।

-নির্বাচনে বিজয়: ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে, তার আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক বিজয় লাভ করে, পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে সামগ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

-স্বাধীনতার ঘোষণা: পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করায় উত্তেজনা বেড়ে যায়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুজিব আইন অমান্যের ডাক দিয়ে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

-মুক্তিযুদ্ধ: নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি দিতে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। যুদ্ধের সময় মুজিবের নেতৃত্ব জাতিকে স্বাধীনতার লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

-প্রত্যাবর্তন এবং পুনর্গঠন: ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর, শেখ মুজিব সদ্য স্বাধীন দেশে ফিরে আসেন এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন।

-হত্যা: ১৫ই আগস্ট, ১৯৭৫ সালে, বাংলাদেশে একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়, যার ফলে শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এর পর দেশটি কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামরিক শাসনে নিমজ্জিত ছিল।

-লেগেসি বা উত্তরাধিকার: শেখ মুজিবের নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ বাংলাদেশের জন্মের সহায়ক হিসেবে স্মরণ করা হয়। তিনি স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য জাতির সংগ্রামের প্রতীক হয়ে আছেন।

শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনকাহিনী তার জনগণের প্রতি তার উৎসর্গ এবং বাঙালি জনগণের অধিকার ও আকাঙ্ক্ষা অর্জনে তার অটল অঙ্গীকারের প্রমাণ।