০৬ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৯:২৮:২০ পূর্বাহ্ন


গরম জল তো কামান থেকে দেয়: অরুণা বিশ্বাস
আগন্তুক আলেয়া
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২৪-০৯-০৫ ১৪:৩১:৫৯
গরম জল তো কামান থেকে দেয়: অরুণা বিশ্বাস


অবশেষে দূর কানাডা থেকে ঢাকার সঙ্গে কথা বললেন ‘গরম জল’-খ্যাত অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। আত্মপক্ষ সমর্থনে বললেন অনেক কথা। এটিও পরিষ্কার করলেন, ‘গরম জল’ বলতে তিনি জলকামানের কথা বুঝিয়েছেন!

অরুণার ভাষায়, ‘আমরা কিন্তু সেখানে (গ্রুপে) কোনও বাজে কথা বলিনি। আমরা কিন্তু সব সময় বলেছি ছাত্রদের সঙ্গে বসেন। কথা বলেন। আমরা তো আর নীতিনির্ধারণী কেউ না। সেখানে বলা হয়েছে হাসপাতালে আগুন। ওখানে কেউ ঢুকতে পারছে না। আমি বলেছি গরম জল দিলেই হয়। গরম জল তো কামান থেকে দেয়। জলকামান লিখি নাই আর কি। ওখানেই বোধহয় মিসটেক হয়েছে। কামানে যে গরম জল থাকে সেটার কথা বলেছি।’

বলা দরকার, ‘আলো আসবেই’ শিরোনামে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশট নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তুলকালাম অবস্থা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে প্রায় ১৬০ জন আওয়ামীপন্থি সংসদ সদস্য, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, সাংবাদিক সংযুক্ত ছিলেন ওই গ্রুপে। সেখানে তাদের কথোপকথন ফাঁস হলে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সেখানেই কথা প্রসঙ্গে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার গায়ে ‘গরম জল ঢালা’র পরামর্শ দিয়েছেন অরুণা বিশ্বাস। এরপর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরই তিনি কানাডার উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন।

সেই প্রসঙ্গে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মুখ খোলেন অভিনেত্রী। শুরুতেই বলেন, ‘শিল্পীদের এখন বেকায়দা অবস্থা। আমরা শিল্পীরাই শিল্পীদের পেছনে কথা বলছি। আসলে গ্রুপ তো সবারই থাকে। আমাদেরও ছিল।’

এরপর প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন, আন্দোলনের সময় আপনারা বিটিভি ও মেট্রোরেলের পাশে দাঁড়ালেন, উল্টোটা কি করা যেত না। ছাত্রদের পাশে তো দাঁড়াতে পারতেন? জবাবে অরুণা বলেন, ‘সত্যি কথা হলো আমি তখন অসুস্থ ছিলাম। পাঁচদিন কোনও খবর নিতে পারিনি। ইন্টারনেট যখন বন্ধ ছিল, তখন। ওই সময় যে বাচ্চাদের এত কিছু হয়েছে জানতাম না। আসলে আমরা কেউ কিন্তু ছাত্রদের বিপক্ষে ছিলাম না। আমাদের মিডিয়ার লোকজন তাদের বিপক্ষে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে। আমরা কিন্তু সন্ত্রাসীদের কথা বলেছি। ছাত্রদের কথা না।’

কানাডা থেকে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে এড়িয়ে যান অভিনেত্রী। বলেন, ‘এগুলো এখন আর না বলি। এখন কোনও কিছুই নরমাল লাগছে না। কাউকে আপন মনে হচ্ছে না। দেখছি তো অনেক সাংবাদিকের বউ মন্ত্রীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গান গাইছে। অনেক সাংবাদিক জাতীয় পুরস্কার পাইছে। তারা তো ধুমায়া লিখে গেছে। আমি আওয়ামী লীগ করছি ঠিকই, সেন্সর বোর্ডের মেম্বার ছিলাম, কিন্তু আমি তো কোনও নীতিনির্ধারকের জায়গায় ছিলাম না।’

কিন্তু এটাও তো গুঞ্জন রয়েছে অরুণা বিশ্বাস এত কিছু করেছেন বিটিভি’র মহাপরিচালক হওয়ার আশায়। সেটিও এড়িয়ে যাননি। বরং শুধরে দিয়ে বলেছেন, ‘নাহ। আমি বিটিভির ডিজি হতে চাই নাই। এটা তো হওয়া সম্ভব না। আমি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রাম হওয়ার জন্য বলেছিলাম আগের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকে। উনি বলেছিলেন, এটা তো প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। এইটুকুই। আমি আসলে কাজ করার জন্যই হতে চেয়েছিলাম।’ 

৫ আগস্টের ফলাফল নিয়ে অরুণা বিশ্বাসকে যদি আত্মসমালোচনা করতে বলা হয় কী বলবেন? দীর্ঘশ্বাস ফেলে অরুণা বলেন, ‘আমি এগুলো বলতে গেলে তো…। এসব নিয়ে বলা ঠিক না। কিছুই বলব না। অনেক সময় সত্য কথা বলা যায় না। বলা উচিতও না। আমরা শিল্পী হইতে পারি, আমাদের যে অনেক মর্যাদা আছে তা না। আমি কিন্তু বিএনপির সময়ও কোনও অ্যাওয়ার্ড পাইনি। ওই সময় বিটিভিতে বাবুল ভাইকে বলে দু-একটা কাজ করেছি। অনেকে ভাবছে আওয়ামী লীগ করেছি, অনেক টাকা-পয়সা পেয়েছি। কোথায় টাকা-পয়সা? অনেক সময় তো আমাদের সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলত না।’

আলাপের শেষাংশে অরুণার অভিমানী ইঙ্গিত বিগত সরকারপ্রধান ও কর্তাদের দিকেই।