তরুণ অভিনেত্রী নিজেই লাইভে এসে বললেন, তার সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছে না! যদিও কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন ‘ভুয়া ভূতে’র গল্প। ২১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ১০ মিনিটের ওই লাইভ দেখে সাদিয়া ভক্ত, দর্শক, স্বজন ও মিডিয়াকর্মীদের মধ্যে রীতিমতো আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, ফেসবুক লাইভ করে তিনি দেখালেন অলৌকিক একটি ছায়া তাকে অনুসরণ করছে! যে ছায়াটি তিনি নিজ হাতে দেখান দর্শকদের।

রাতে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে দিনের বেলায় নিজেই ফেসবুক থেকে হাওয়া! কারণ ততোক্ষণে জানাজানি হয়, রাতের ভৌতিক লাইভটি তিনি করেছেন একটি ওটিটি কনটেন্ট-এর প্রচারণার অংশ হিসেবে। এমন খবরে গোটা মিডিয়া ফুঁসে উঠেছে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। অভিযোগ, এটি রীতিমতো প্রচারণার নামে প্রতারণা।

বলা যায়, সমালোচকদের তোপের মুখে সোশ্যাল হ্যান্ডেল ছাড়তে বাধ্য হন এই তরুণ অভিনেত্রী। সবার একটাই অভিযোগ, সাদিয়া নিজের সস্তা প্রচারণার জন্য লাইভ প্রতারণা করেছেন সবার সঙ্গে। মঙ্গলবার বিকাল থেকে তার মূল আইডি আর ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এই বিষয়ে সাদিয়ার মন্তব্য জানতে চেয়েও পাওয়া যায়নি। তবে সমালোচনার শুরুর দিকে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ তার প্রতিক্রিয়া ছিলো এমন, ‘আমি তো একজন শিল্পী, যেই ওয়েব ফিল্মে কাজ করেছি তারা আমাকে অনুরোধ করে এরকম একটি প্রচারণা চালানোর জন্য। প্রথমে আমি তাদেরকে না বলে দেই। পরে কাজটি করলেও আমার ধারণা ছিল, সাধারণ মানুষ হয়তো বুঝবে, এটা কোনও সিনেমা বা নাটকের প্রচারণার অংশ।’   

তবে সাদিয়া ফেসবুক থেকে আড়ালে গেলেও তার লাইভ ভিডিও এরমধ্যে ভাইরাল। সঙ্গে চলছে সমালোচনার জোয়ার। ভিডিওটি প্রসঙ্গে শেখ ফজলু নামের এক সাধারণের মন্তব্য এমন, ছোট বেলায় একটি গল্প পড়েছিলাম বাঘ আর রাখাল ছেলের। সাদিয়া আয়মান তেমনই করলো। যদি সে কখনও সত্যিই বিপদে পড়ে তখন মানুষ বিশ্বাস করবে না। তাই তার এমন প্রচারণা করা উচিত হয়নি। 

জাহিদ ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, দর্শকদের ঠকানোর জন্য সাদিয়া আয়মানকে ধিক্কার জানাই। সাদিয়া ইসলাম নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনার কি কমনসেন্সের অভাব? আপনি যদি কাজের প্রমোশন করবেন তাহলে লাইভ শেষে বলতে পারতেন সেটা। না বলে হুট করে কেটে দিলেন। মাঝ রাতে জাতির ইমোশন নিয়ে খেলার কি দরকার ছিল।

রমিজ উদ্দিন লিখেছেন, শুধু সাদিয়া আয়মান নয়, যারা তাকে দিয়ে এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রচার-প্রচারণা করিয়েছেন তাদেরও ধিক্কার জানাই।

সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে এসে কী বলেছেন ও করেছেন সাদিয়া, সেটি বিস্তারিত জানা যাক। তিনি চোখে-মুখে চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে জানান, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরে একটা বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমি জানিনা, এটা কেন হচ্ছে। তবে বিষয়টা কয়েকবার ঘটেছে দেখেই আজকে লাইভে এসেছি।’ 

এরপর ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে অভিনেত্রী বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে আমি একটা শুট শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম, তখন রাস্তায় যাওয়ার পথে দেখি পা থেকে মাথা পর্যন্ত একজন কালো কেউ আমার গাড়ির সামনে চলে আসে। এরপর গাড়ি থামিয়ে নেমে দেখি সেখানে কেউ নেই। এরপরে আমরা নিরাপদে সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। তবে চলে আসার পরেও বাসার বিপরীত দিকে আবারও সেই ব্যক্তিকে দেখতে পাই।’

এরপর একটু থেমে সাদিয়া বলেন, ‘আমি কথা বলতে কাঁপছি। কিছুক্ষণ আগেও বারান্দা থেকে দেখেছি সেই ব্যক্তি আমার বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।’ এরপর মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যান এই অভিনেত্রী। সেখানে গিয়ে ফোনের ব্যাকক্যামেরা অন করে লাইভে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কালো পোশাকে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে কাঁদতে থাকেন। এখানেই লাইভ শেষ করেন সাদিয়া। 

বলা দরকার, সাম্প্রতিক সময়ে আরও একটি কাণ্ড ঘটিয়েছেন সাদিয়া। ফেসবুক পোস্ট দিয়ে এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করিয়েছেন। তুলেছেন চরম মানহানিকর অভিযোগ! সেটি নিয়েও মিডিয়ায় তুমুল তোপের মুখে পড়েন তরুণ এই অভিনেত্রী।