১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৪৬:০০ অপরাহ্ন


১৩১ দেশ ভ্রমণে বাংলাদেশের আসমা
সৈয়দ ইমরুল সামাদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১২-১১ ০১:১৩:০৪
১৩১ দেশ ভ্রমণে বাংলাদেশের আসমা আসমা


হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া মেয়েটি এখন ছুটছে বিশ্বজয়ের পথে! বাংলাদেশের মেয়ে কাজী আসমা আজমেরী এ পর্যন্ত ভ্রমণ করেছেন ১৩১টি দেশ! না, তিনি কোনও পশ্চিমা দেশের পাসপোর্ট দিয়ে এই বিশ্বভ্রমণে বের হননি। বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়েই ১৩১ দেশ ভ্রমণ করে তাক লাগিয়েছেন বিশ্বকে। 

সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর মরিশাসের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। আসমার স্বপ্ন, বিশ্বের সব দেশে একবার হলেও যাওয়া। 

সর্বশেষ মরিশাস ভ্রমণ প্রসঙ্গে আসমা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মরিশাসের প্রতি একটা আগ্রহ ছিলো। দেশটিতে হানিমুনে যাওয়ার কথা থাকলেও, এবার একাই গেলাম।’

আসমা মরিশাসে একাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর সবুজ পাসপোর্ট এবং ওখানকার স্কুল-কলেজে তার ভ্রমণের গল্প শোনাচ্ছেন। মোটিভেশন বক্তব্য দিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়। ইউনিভার্সেল কলেজে প্রায় তিনটি সেশনে আড়াইশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার ভ্রমণের গল্প শেয়ার করেছেন আসমা।

মরিশাস সম্পর্কে এই তরুণী বলেন, ‘ভারত থেকে এসে মনে হলো আরেকটি ইন্ডিয়ান কমিউনিটি। কিন্তু তারা অত্যন্ত আধুনিক ও চিন্তা-চেতনায় অনেক উন্নত একটি দেশ। এ দেশে ফ্রান্স, ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষায় কথা বলা হয়।’

 

ভ্রমণপাগল কাজী আসমা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি খুব দুরন্ত ছিলাম। ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা ছিল প্রবল। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই বিশ্ব ঘুরে দেখার ইচ্ছা জাগে। প্রথমে গিয়েছিলাম থাইল্যান্ড। নীল সমুদ্র দেখার পর মনে হয়েছিল, ভ্রমণের জন্য যত টাকা খরচ হয়েছে; এই সমুদ্র দেখার পর সব উঠে গেছে। এর পর নেপাল যাই। হিমালয় দেখার পর পুরো বিশ্বের সৌন্দর্য আমাকে টানতে থাকে। তখন থেকে পৃথিবীর নানা দেশে যাওয়ার ভিসা সংগ্রহের লক্ষ্যে নামি।’

পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতেন আসমা। এতে যে টাকা জমেছে সেই টাকা দিয়েই ভ্রমণ করছেন। ‘পড়াশোনা শেষ হলে এক-দেড় বছর চাকরি করি আর ছয় মাস ভ্রমণ করি’— জানান আসমা।

তার মতে, ভ্রমণ করলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইন, নিয়মনীতি, নৈতিকতা জানা ও শেখা যায়। নিজের মধ্যে থেকে হিংসা-বিদ্বেষ চলে যায়। যারা ভ্রমণ করেন, তারা উদার মনের হয়। নিজের মধ্যে দক্ষতা তৈরি হয় ভ্রমণের মাধ্যমেই।

যারা হতাশায় ভুগেন ভ্রমণ তাদেরকে এই প্রবণতা থেকে মুক্তি দিতে পারে বলে মনে করেন আসমা। তিনি বলেন, ‘যারা আত্মহত্যার মতো পথে হাঁটার চিন্তা করেন, তাদের একবার ভ্রমণের পথে হাঁটা উচিত। কারণ আমি নিজেও একটা সময় মনে করেছি, আত্মহত্যা করি। অথচ এখন মনে হয় জীবন অনেক সুন্দর, ভ্রমণের মতো।’