দেশের ক্রিকেটে এখন উত্তাল হাওয়া বইছে। টাইগার ওয়ানডে দলের অধিনায়ক কে হবে তা নিয়ে বেশ নাটকীয়তার পর এখন আলোচনার মুখ্য বিষয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দেশের এই প্রবীণ ক্রিকেটারকে ছাড়াই এশিয়া কাপের জন্য ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
তাই অনেকের ধারণা, আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হয়ত জায়গা হবে পাবে না রিয়াদ। ‘সাইলেন্ট কিলার’ খ্যাত এই খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের শেষ ম্যাচটাও খেলে ফেলেছেন এমন বিশ্বাসও আছে অনেকের। তাই অভিজ্ঞ এই টাইগার ব্যাটারকে জাতীয় দলে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে তার সমর্থকরা।
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানবন্ধন করে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে রিয়াদকে দলে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সমর্থক গোষ্ঠীরা। তামিম ইকবালকে অবসর ভেঙে যেভাবে ফিরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী, তেমন ভাবে রিয়াদকেও দলে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
মানবন্ধনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রিয়াদ সমর্থকদের দাবি, টাইগার প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের চাপে বিসিবি রিয়াদকে বাদ দেওয়ার মতো হঠকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এই ক্রিকেটারকে ফেরানো না হলে ক্রীড়ামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে স্মারকলিপি দেবেন তারা।
চলতি বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সর্বশেষ বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছিলেন রিয়াদ। এরপর ‘বিশ্রামের’ নাম দিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেশ ও দেশের বাইরের উভয় সিরিজে জাতীয় দলের বাইরে রাখা হয় এই অলরাউন্ডারকে। সবশেষ আফগানিস্তান সিরিজে দলে তার ফেরার গুঞ্জন উঠলেও হজ পালনের জন্য ছুটি নেন রিয়াদ।
তবে এশিয়া কাপের ক্যাম্প শুরুর আগে রিয়াদকে অনুশীলনে ফিরতে দেখে ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত মিলছিল। সেই ভিন্ন কিছুর আশা আপাতত এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে গেছে অনেকটাই। সিনিয়র এই ক্রিকেটারকে এশিয়া কাপের জন্য বিবেচনাই করেননি নির্বাচকরা। যা মেনে নিতে পারছেন না রিয়াদের ভক্তসমর্থকরা।
তাই অলৌকিক কিছু না ঘটলে রিয়াদ যে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলছেন না তা মোটামুটি নিশ্চিত। বিষয়টি মানতে পারছেন না দেশের রিয়াদ ভক্তরা। দলের এই সিনিয়র সদস্যকে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলে ফেরাতে মানববন্ধন করেছে তারা। রিয়াদকে বাদ দেওয়াটাকে হঠোকরি সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন তারা।
আজকের মানবন্ধনে মোহাম্মদপুর থেকে আগত আবু জাফর বলেন, রিয়াদ একজন টপ অর্ডার ব্যাটার। তাকে এভাবে বাদ দেওয়াটা মোটেই ঠিক হয়নি। আমরা আবেগ নয়, পারফরম্যান্স দিয়ে বিচারের কথা বলছি। যখন দেখলাম রান করার পরেও তাকে বাদ দেওয়া হলো, তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম যে প্রতিবাদ করবো।
৩৭ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুজ। ব্যাট হাতে খুব একটা খারাপ না করলেও প্রশ্ন আছে তার ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ও ফিল্ডিং সক্ষমতা নিয়ে। দলের চাহিদা অনুযায়ী মারকুটে ব্যাট করতে পারছেন না রিয়াদ। সেই সঙ্গে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে স্লথগতি ও ফিল্ডিংয়ে রিফ্লেক্সের ঘাটতিকে তার বাদ পড়ার কারণ হিসেবে বলছেন অনেকেই।
তবে রিয়াদের পরিবর্তে যাদের দলে নেওয়া হয়েছে, তাদের নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সমর্থকরা। একজন বলেন, উনাকে বাদ দিয়ে বাকি যে তিনজনকে নেওয়া হয়েছে, তাদের পারফরম্যান্স বেশ লো। প্রধানমন্ত্রী একজন ক্রিকেট অনুরাগী মানুষ, আশা করি তিনি বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন। আমরা গণভবনে গিয়ে তার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করবো।
এর আগে, রিয়াদকে দলে ফেরানোর দাবিতে তার নিজ জেলা ময়মনসিংহেও মানববন্ধন করেছেন সমর্থকরা।