আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম তখন পিনপতন নীরবতায়। কানায় কানায় পূর্ণ দর্শক; প্রায় সবাই দাঁড়িয়ে আছেন। কারও চোখে পানি, কেউ হতাশ। আর সবুজ কোর্টের মাঝে দাঁড়িয়ে টেনিসকন্যা সেরেনা উইলিয়ামস।যিনি কিছুক্ষণ আগেই ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে আজলা টমলিয়ানোভিচের কাছে হেরে গেছেন!
যদিও গ্যালারিজুড়ে এই কান্না পরজয়ের গ্লানিতে নয়, বরং প্রিয় সেরনোকে বিদায় জানানোর প্রতিক্রিয়া এটি।বিদায়মঞ্চ তৈরি।
২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিন তার বিদায়ী ভাষণে কী বলেন, সে দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সবাই। সেখানেই সেরেনাকে প্রশ্ন করা হলো, কোর্টে আবার তাকে দেখার কি কোনও সুযোগ রয়েছে? হালকা হেসে জবাবে সেরেনা জানালেন, তিনি নিজেই জানেন না। তবে কি সেরেনা এখনই অবসর নিচ্ছেন না? আবার কি র্যাকেট হাতে দেখা যাবে টেনিসের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকাকে? সবাইকে ধোঁয়াশায় রেখেই কোর্ট ছাড়লেন সেরেনা।
খেলা শেষে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সেরেনা। কেঁদে ফেলেন। গ্যালারিতে তখন বসে সেরেনার মা ওরাসেন প্রাইস, স্বামী অ্যালেক্সিস ওহানিয়ান। মেয়েকে কাঁদতে দেখে উদ্বিগ্ন দেখাল মাকে। সে সব দেখে কিছুক্ষণ পরে চোখের পানি একটু সামলে নিলেন সেরেনা।
মুখে বললেন, ‘আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে।’ ফিরে এলো পরিচিত হাসি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য পরিবারকে পুরো কৃতিত্ব দিলেন সেরেনা। বললেন, ‘আমার পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সবার আগে বাবাকে ধন্যবাদ। আমি জানি তুমি দেখছ। আমার পাশে এত বছর ধরে থাকার জন্য পরিবারকে ধন্যবাদ। কয়েক দশক ধরে খেললাম। ভাবতেই পারছি না। আমার বাবা, মার হাত ধরেই সবটা শুরু। ওদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
গ্যালারিতে ছিলেন বড় বোন ভেনাসও। কয়েক ঘণ্টা আগে সেরেনা ও ভেনাস ছিটকে গেছেন ইউএস ওপেনের নারীদের ডাবলস থেকে। বোনের লড়াইয়ের শুরু থেকে যিনি পাশে রয়েছেন, বিদায়বেলাতে কি দূরে থাকতে পারেন? তার ক্যারিয়ারে বড় বোনের কতটা অবদান রয়েছে সেটাও জানাতে ভোলেননি সেরেনাও।