মৃত্যুর কিছু পূর্বে কর্নেল গুলজার আহমেদ হেড কোয়ার্টারকে বলেছিল "হ্যালো, হেড কোয়ার্টার আমি কর্নেল গুলজার বলছি, দুইটা ফোর্স পাঠান প্লিজ। ওরা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।"
৪০ মিনিট পর তার শেষ কথা ছিল, "অনেক অফিসারের লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। আপনারা কি আসবেন না আমাদের বাঁচাতে?"
২০০৪-০৫ সালে যখন জেএমবি মাথাচাড়া উঠেছিল এবং সমগ্র জাতিকে অশান্তিতে নিমজ্জিত করেছিল, তখন এই কর্নেল গুলজার আহমেদ বিচক্ষণ এবং চৌকশ প্ল্যানিং এর মাধ্যমে পুরো জেএমবি স্কোয়াডকে আটক করে জাতিকে স্বস্তি দিয়েছিলেন।
প্রয়োজনে পুরো বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও, তার ইন্টিলিজেন্স দ্বারা সিলেটের `সুর্যদিঘল বাড়ী` থেকে শীর্ষ জঙ্গি শায়খ আবদুর রহমানকে কোনো রক্তপাত ছাড়াই আটক করতে সক্ষম হন তিনি।
দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া জঙ্গি দমনে তার অপরিসীম দক্ষতার প্রশংসা করেছিল!
এছাড়াও, বাংলা ভাইকে আটক করার মিশন চলাকালে তার গর্ভবতী স্ত্রী ফোন করে বলেছিলেন, "এত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার দরকার কি?"
রেগে গিয়ে স্ত্রীকে উত্তর দিয়েছিলেন, "তোমার সাহস তো কম না। তুমি আমাকে নিষেধ করছো আমার দেশের মানুষকে বাঁচাতে?! তোমাদের জন্য আল্লাহ্ আছে, আমার জন্যও আছেন। ভাগ্যে যা আছে তাই হবে! ফোন রাখো।"
ঘটনার মাত্র দশ দিন আগে বিডিআর'এ যোগদান করেছিলেন তিনি। সেই দিন অব্দি তার সাথে সৈনিক দের কোন লেনদেনই ছিলনা। তারপরও সবচেয়ে বিকৃত এবং ভয়ংকর অবস্থায় তার লাশ পাওয়া গেল হত্যার ১১ দিন পর।
শহীদ কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান গোয়েন্দা বিভাগের ( ইন্টেলিজেন্স উইং) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (সিলেট) পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।