০১ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৫১:৩৯ পূর্বাহ্ন


ময়ুরভঞ্জ থেকে রাইসিনা হিলস: ভারতের দ্রৌপদীবরণ
ট্রেন্ড ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১২-১১ ০১:১৩:০৪
ময়ুরভঞ্জ থেকে রাইসিনা হিলস: ভারতের দ্রৌপদীবরণ দ্রৌপদী মুর্মু


প্রথম আদিবাসী হিসেবে ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। এছাড়া তিনি ভারতের দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফা ভোট গণনা শেষেই তার রাইসিনা হিলসের বাসিন্দা হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। পরাজয় মেনে নেন বিরোধী দলীয় প্রার্থী যশবন্ত সিনহা। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ সরকার ও বিরোধী দলীয় রাজনীতিকরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িষ্যার সাঁওতাল আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। সমাজকর্মী হিসেবে বেশ পরিচিতি তার রয়েছে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়নে একাধিক কাজ করেছেন তিনি। 

১৯৫৮ সালে ২০ জুন ওড়িষ্যার ময়ুরভঞ্জের একটি আদিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দ্রৌপদী মুর্মু। বিএ পাস করে ওড়িষ্যা সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এই চাকরি করেন ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। পরে ১৯৯৪ সালে রায়রাংপুরের অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শিক্ষকতা করেন ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত।

ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাংক কর্মকর্তা শ্যাম চরণের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল দ্রৌপদী মুর্মুর। তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তিন সন্তানের মা তিনি। তার দুই ছেলেও প্রয়াত। একমাত্র মেয়ে জীবিত রয়েছেন। তার নাম ইতশ্রী।

রাজনীতিতে ১৯৯৭ সালে পা রাখেন দ্রৌপদী মুর্মু। ওড়িষ্যার রায়রাংপুর জেলা থেকে কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জয় লাভ করেন। ২০০২-২০০৯ সাল পর্যন্ত ময়ূরভঞ্জ জেলার বিজোপির নেত্রী ছিলেন তিনি। ২০০৪ সাল রায়রাংপুর বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। এরপর ২০১৫ সালে ঝাড়খণ্ডে চলে আসেন দলের নির্দেশে। ২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত তিনি বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। 

দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িষ্যা সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পরিবহন ও বাণিজ্য দফতরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ২০০০-০৪ সাল পর্যন্ত। পরে তাকে পশুপালন ও মৎস দফতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের অন্যতম ধনী ও অন্যতম জনপ্রিয় আদিবাসী রাজনীতিবিদ। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৫ লাখ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১১ কোটি ৭০ লাখ রুপি।

২০০৭ সালে সেরা বিধায়ক হিসেবে তাকে নীলকান্ত সম্মান দিয়েছিল ওড়িষ্যা সরকার। ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। 

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নতুন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির বাসভবনে গিয়ে এরমধ্যে তাকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি।

দ্রৌপদীর জয় নিশ্চিতের পর টুইট বার্তায় মোদি বলেন, ‘ইতিহাস রচনা করলো ভারত। যখন দেশের একশ ত্রিশ কোটি মানুষ যখন স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছেন, তখন পূর্ব ভারতের প্রত্যন্ত এলাকায় আদিবাসী পরিবারের এক নারী আমাদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন। এই নজিরের জন্য দ্রৌপদী মুর্মুকে অভিনন্দন।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন