০১ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:২৮:৪৬ অপরাহ্ন


মায়ের কোলে শায়িত হলেন গানের গাজী
ট্রেন্ড রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০২২-১২-১১ ০১:১৩:০৪
মায়ের কোলে শায়িত হলেন গানের গাজী


গাজী শব্দের অর্থ যুদ্ধে বিজয়ী বীর। দেশ ও গানের জন্য তার যুদ্ধ আর ভালোবাসা ছিলো আমৃত্যু। তিনি দুটোতেই জয়ী হয়েছেন। অতঃপর বীরের বেশেই চিরনিদ্রায় মায়ের কোলে শায়িত হলেন বাংলার গানের গাজী; তথা গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বনানী মা খোদেজা বেগমের কবরেই এই গীতিকবি, নির্মাতা ও প্রযোজকের মরদেহ সমাহিত করা হয়।

এর আগে বেলা ১১টায় কবির মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সেখানে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সর্বসাধারণের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

বেলা ১২টার দিকে শ্রদ্ধা জানাতে মরদেহ নেওয়া হয়েছে এফডিসিতে। সেখানেই গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে শেষবারের মতো দেখতে ও শ্রদ্ধা জানান তার ৬০ বছরের সহকর্মীরা। সেখানে হয় প্রথম জানাজা। এরপর চ্যানেল আই, গুলশানের আজাদ মসজিদ হয়ে বনানী কবরস্থান।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে ২১ বছর বয়সে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখেন ১৯৬৭ সালে। ওই চলচ্চিত্রের নাম ছিল ‘আয়না ও অবশিষ্ট’।

১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লেখায়ও দক্ষতা দেখান তিনি। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। তিনি মোট ৪১টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। গাজী মাজহারুলের পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম- ‘শাস্তি’, ‘চোর’, ‘শর্ত’, ‘স্বাধীন’, ‘সমর’, ‘রাগী’, ‘আর্তনাদ’, ‘জীবনের গল্প’, ‘পাষাণের প্রেম’, ‘তপস্যা’, ‘ক্ষুধা’, ‘পরাধীন’, ‘এই যে দুনিয়া’, ‘হৃদয় ভাঙ্গা ঢেউ’।

২০ হাজারেরও বেশি গানের রচয়িতা তিনি। ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ ও ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’ তার লেখা তুমুল জনপ্রিয় দুটি গান। বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পেয়েছে তার লেখা তিনটি গান।

২০০২ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ২০২১ সালে তিনি সংস্কৃতিতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য গাজী মাজহারুল স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এছাড়াও গাজী মাজহারুল আনোয়ার ছয়বার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’, একাধিকবার ‘বাচসাস পুরস্কার’, ‘বিজেএমই অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।


That's why they are not on social media!